সরকারিভাবে আমদানির অনুমতি পত্র (আইপি) বন্ধ করে দেয়া হলেও সাতক্ষীরার বাজারে পেঁয়াজের দাম প্রায় স্থিতিশীল রয়েছে। বর্তমানে সাতক্ষীরার পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৬ থেকে ৬৭ টাকা ও ভারতীয় আমদানি করা পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৬২ টাকা কেজি। খুচরা বাজারে এসব পেঁয়াজ কেজিতে ৫ থেকে ৭ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির আগেও পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজ সর্বোচ্চ ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। তবে বাজারে কাঁচামরিচের ঝাঁজ কমলেও বেড়েছে সব ধরনের সবজির দাম।
সোমবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর বড়বাজারের পাইকারি পেঁয়াজের আড়ৎ ঘুরে দেখা গেছে, দেশি পেঁয়াজ বস্তা কাটায় বিক্রি হচ্ছে ৬৫/৬৬ টাকা এবং মাটিতে ঢেলে বিক্রি হচ্ছে ৬৭ টাকা কেজি। এছাড়া দেশি লাল জাতের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি। এদিকে ভারতীয় নাসিক জাতের পেঁয়াজ বস্তা কাটা ৬০ টাকা এবং মাটিতে ঢেলে বিক্রি হচ্ছে ৬২ টাকা কেজি। খুচরা বাজারে এসব পেঁয়াজ কেজিতে ৫ থেকে ৭ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকলেও বাজারে পেঁয়াজের দাম কমতির দিকে বলে জানান ব্যবসায়িরা।
এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে সাতক্ষীরার বাজারে কমেছে কাঁচামরিচের দাম। পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি। খুচরা বাজারে যা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি। অথচ এক সপ্তাহ আগে পাইকারিতে এই কাঁচা মরিচের দাম ছিল ২০০ টাকা কেজি। কিন্তু বেড়েছে সব ধরনের সবজির দাম। প্রতিটি সবজি কেজিতে ২০/৩০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
সুলতানপুর বড়বাজারের পাইকারি পেঁয়াজের আড়তের মালিক আব্দুল আজিজ জানান, বাজারের পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। সরকারিভাবে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি পত্র (আইপি) বন্ধ থাকলেও দাম কমতির দিকে। বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ আগের চেয়ে অনেকটা বেড়েছে। যে কারণে আমদানি বন্ধ থাকলেও পেঁয়াজের দাম বাড়েনি।
তিনি আরও বলেন, দাম বাড়ার সুযোগে অধিক মুনাফার আশায় অনেক ব্যবসায়ি পেঁয়াজ তাদের গুদামে মজুদ করে রাখে। এসময় অনেক চাষীও বেশি দাম পাওয়ার আশায় বাজারে পেঁয়াজ ছাড়ে না। কিন্তু হঠাৎ করে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু হওয়ায় ওইসব ব্যবসায়ি ও চাষীরা লোকসানের শঙ্কায় বাজারে পেঁয়াজ ছাড়ায় সরবরাহ বড়েছে। যে কারণে দাম এখনও স্বভাবিক রয়েছে। বাজারে সরবরাহ যে অবস্থায় আছে তাতে দাম আরও কমতে পারে বলে জানান তিনি।
সাতক্ষীরার ভোমরা কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে সবশেষ ২৭ মার্চ ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি হয়। পরবর্তীতে দেশের বাজারে দাম স্বাভাবিক রাখতে সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে দীর্ঘ চার মাস ২০ দিন বন্ধ থাকার পর গত ১৭ আগস্ট (রোববার) থেকে ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়। প্রথম দিনে সাতটি ভারতীয় ট্রাকে ২০২ মেট্রিক টন পেঁয়াজ ভোমরা বন্দরে ঢোকে। পরের দিন ১৮ আগস্ট (সোমবার) ১৩ গাড়িতে আরও ৩১০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়। আইপি চালু থাকা অবস্থায় পাঁচ দিনে ভোমরা বন্দরে ভারত থেকে ১২৬ ট্রাকে মোট ৩ হাজার ৬৫০ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়।
ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবু মুসা জানান, কোনা পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ১৯ আগস্ট থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি পত্র (আইপি) দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। এতে করে বিপাকে পড়ে যায় বন্দরের ব্যবসায়িরা। তবে আগের আইপি থাকা আমদানিকারকরা পেঁয়াজ আনছেন। দ্রুত পদক্ষেপ না হলে সরবরাহের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। সরকার চাইলে আইপি দিয়ে বাজারে সরবরাহ বাড়াতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ভোমরা কাস্টমসের সহকারি কমিশনার মোঃ শওকত হোসেন জানান, আমদানির শুরু থেকে পাঁচদিনে ভোমরা বন্দর দিয়ে ১২৬ ট্রাকে মোট ৩ হাজার ৬৫০ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়। বর্তমানে আইপি বন্ধ থাকায় ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে না।
খুলনা গেজেট/এনএম